স্মার্ট টিভি কি? এই সময়ের স্মার্ট টিভির দাম | কেনার আগে যে ফিচারগুলো দেখে নেবেন?

(Smart TV) স্মার্ট টিভি কি?

স্মার্ট টিভি হলো ইন্টারনেট সংযুক্ত টিভি। স্মার্ট টিভির সাথে একটি নেটওয়ার্ক পোর্ট থাকে (আজকাল অনেকগুলিতে WiFi রিসিভারও রয়েছে) যা ব্যবহার করে আপনি ইন্টারনেটের সাথে টিভিটিকে সংযুক্ত করতে পারবেন। অর্থাৎ একই সাথে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল সহ অনলাইনেও টিভি দেখা সম্ভব হবে।
স্মার্ট টিভি মানে কেবলই একটা টেলিভিশন নয়। বরং টেলিভিশন থেকে আরো বেশি কিছু। এর মাধ্যমে পছন্দসই গান শোনা, ভিডিও দেখা, ভিডিও গেমস খেলা ইত্যাদি করা যাবে। এছাড়া স্মার্টফোন উপযোগী অ্যাপ্লিকেশনও ইনস্টল করা যাবে। ছবি কিংবা ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে স্মার্ট টিভি অনেক বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে। যেকোন ভিডিও রেকর্ড কিংবা সাময়িক বিরতি দিয়ে রাখা যাবে। ছবি জুম ইন জুম আউট করা যাবে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুবিধা মতন যেকোন ভিডিও ছবি দেখা যাবে। সবচেয়ে মজার ফিচারটি হল, স্মার্ট টিভিতে রাখা ক্যামেরার মাধ্যমে আপনিই নিজেই যে কোন কিছু ভিডিও করে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে অনলাইনে সম্প্রচার করতে পারবেন।

স্মার্ট টিভির বৈশিষ্ট্য বা ফিচারসমূহ:

১ । প্রথমেই ইন্টারনেট কানেক্ট করার মত সুবিধা থাকতে হবে। যেহেতু Wi-Fi প্রযুক্তিতে খুব সহজেই সব ধরণের ডিভাইসে এখন ইন্টারনেট কানেক্ট করা যায় তাই এই সুবিধাটা স্ট্যান্ডার্ড স্মার্ট টিভিতে অবশ্যই থাকবে।
২। স্মার্ট টিভিতে ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুযোগ থাকে। যেখানে স্কাইপ, টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। যেকোনো ওয়েবসাইটও দেখতে পারবেন।
৩। স্মার্ট টিভিতে ফ্ল্যাশ সাপোর্ট থাকতে হবে। কারণ আধুনিক সময়ের সবাই বিভিন্ন সাইট থেকে ভিডিও দেখার সুবিধা নেয় এবং সেই সব সাইটের প্রায় সব গুলিতেই ফ্ল্যাশ ব্যবহার করে ভিডিও দেখার সুবিধা দেয়া হয়। আর তাই সেই ফিচারটি আপনার স্মার্ট টিভিতে ব্যবহার করতে অবশ্যই ফ্ল্যাশ সাপোর্ট থাকতে হবে সাথে HTML5 সাপোর্ট থাকলে আরও সুবিধে হয়।
৪। অ্যাপ এবং অ্যাপ স্টোর সাপোর্ট। আধুনিক প্রতিটি ডিভাইসেই এখন তাদের নিজস্ব কিংবা ভিন্ন ভিন্ন ডেভেলপারদের ডেভেলপ করা অ্যাপ আর গেমস ব্যবহারের সুবিধা দেয়। সেই সুবিধা এখন স্মার্ট টিভিতেও যুক্ত করেছে স্মার্ট টিভি প্রস্তুতকারীরা।
৫। রিমোটের দিকেও নজর দিতে হবে। এইটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি গতানুগতিক বাটন টাইপের রিমোর্ট দিয়ে স্মার্ট টিভি চালানোর কথা চিন্তা করেন তাহলে ব্যাপারটা ডিজিটালের ভেতরে এনালগ ইনপুট দেবার মতই হবে। স্মার্ট টিভির রিমোট এমন হবে যাতে আপনার হাতে রেখে নির্দিষ্ট ভঙ্গীতে শুধু ইশারা করলেই সে আপনার কাজটা করতে শুরু করবে। অর্থাৎ সেন্সর সম্বলিত রিমোট থাকা আবশ্যিক স্মার্ট টিভির জন্যে।
৬। এছাড়া স্মার্ট টিভির আরও কিছু গুরুত্ব পূর্ণ ফিচারের মধ্যে আছে টাচ-স্ক্রিন ফিচার, বিভিন্ন মিডিয়া আর ডিভাইস (PS3, AppleTV, Tivo, Roku, Xbox 360) কানেক্ট করার সুবিধা, সেকেন্ড স্ক্রিন ফিচার, 3D স্ক্রিন কম্পাবিলিটি, স্ক্রিন মিররিং, কুইক কানেক্ট, স্পোর্টস মুড, সিনেমা মুড সহ আরও নিত্যনতুন সব ফিচার।

স্মার্ট টিভি কেনার আগে যে ফিচারগুলো দেখে নেবেন:

১। স্মার্ট টিভি কেনার আগে ‘ওয়াই-ফাই বিল্ট-ইন’ নাকি ‘ওয়াই-ফাই রেডি’ তা যাচাই করে নিতে হবে। শুধু ওয়াই-ফাই রেডি স্মার্ট টেলিভিশন হলে পরে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে আলাদা ওয়াই-ফাই ডঙ্গল কেনার প্রয়োজন হবে।
২। স্মার্ট টিভি কেনার আগে আরও দেখে নিতে হবে, এতে ইউএসবি পোর্ট সুবিধা আছে কি না। ইউএসবি পোর্ট থাকলেই যে এক্সটার্নাল হার্ডড্রাইভ বা পেনড্রাইভ সমর্থন করবে এমন কথা নয়। পোর্টেবল হার্ডডিস্ক বা অন্য কোনো ধরনের ডিজিটাল ফরম্যাট সমর্থন করে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে।
৩। আপনার পছন্দের টিভিতে এভিআই, কেএমভি, এমপিফোর, মুভ বা অন্যান্য ফাইল সমর্থন করছে কি না, যাচাই করে নিন। বিক্রেতাকে আগে জিজ্ঞাসা করুন এবং সম্ভব হলে সঙ্গে একটি বিভিন্ন ফাইল ফরম্যাটের মুভি রাখা পেনড্রাইভ রাখুন, যাতে টিভিতে চালিয়ে পরীক্ষা করে নিতে পারেন।
৪। আপনার টিভির সঙ্গে যদি পোর্টেবল হার্ডড্রাইভ ব্যবহারের পরিকল্পনা থাকে, তবে টিভিতে তা সমর্থন করছে কি না, তা টিভি কেনার আগেই পরীক্ষা করে নিন।
৫। স্মার্ট টিভিতে একাধিক এইচডিএমআই পোর্ট থাকে। কমপক্ষে দুটি এইচডিএমআই পোর্ট না থাকলে সে টিভি কেনা উচিত হবে না।
৬। যদি আপনার বাজেটের মধ্যে হয়, তবে অবশ্যই বিল্ট–ইন ওয়াই-ফাই সুবিধার স্মার্ট টিভি কিনবেন। আপনার নিজের সুবিধার কথা ভেবে এবং দীর্ঘমেয়াদি একটি যন্ত্র কেনার আগে একটু যাচাই-বাছাই করে কেনা ভালো। সব মিলিয়ে এই স্মার্ট কিংবা ফোরকে বা কার্ভড টিভি আপনার বিনোদনে যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা।
এটাই স্মার্ট টিভি সম্পর্কিত আজকের পোস্ট। আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভাল লেগেছে এবং এ থেকে আপনারা উপকৃত হবেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
দৈনিক আগামীর সময় | Agamirshomoy.com